প্রচলিত মানহাজ বই থেকে

ln.Author: Guardian Publications

ln.Date : Aug 28, 2024
ln.ToatalView : ৩৯
প্রচলিত মানহাজ বই থেকে

আহলে হাদিস কারা? 

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)-কে এই প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন,
وَنَحْنُ لَا نَعْنِي بِاَهْلِ الْحَدِيثِ الْمُقْتَصِرِينَ عَلَى سَمَاعِهِ اَوْ كِتَابَتِهِ اَوْ رِوَايَتِهِ بَلْ نَعْنِي بِهِمْ: كُلَّ مَنْ كَانَ اَحَقَّ بِحِفْظِهِ وَمَعْرِفَتِهِ وَفَهْمِهِ ظَاهِرًا وَبَاطِنًا وَاتِّبَاعِهِ بَاطِنًا وَظَاهِرًا--
‘আহলে হাদিস দ্বারা এর (হাদিস) শ্রবণ, লিখন অথবা এর বর্ণনা করায় যারা সীমিত, আমরা তাদের বোঝাই না। আমরা বরং ওই ব্যক্তিদের বোঝাই, যারা এর (হাদিস) সংরক্ষণ, জ্ঞান লাভ, একে জাহির (বাহ্যিক) ও বাতিন (অভ্যন্তরীণ) থেকে বোঝা এবং জাহির ও বাতিনের দিক থেকে এর অনুসরণের ব্যাপারে অগ্রগণ্য।’ 

আহলে হাদিস হওয়ার জন্য ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) যে শর্তারোপ করেছেন, সে অনুযায়ী বাংলাদেশের অল্প কয়েকজন আলিম ছাড়া আর কেউ আহলে হাদিসের অন্তর্ভুক্ত নয়।
দুই. মাজহাবিরা যেমন কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে হাদিসের অনুসরণ করেন, অনুরূপ আহলে হাদিসরাও কোনো না কোনো ব্যক্তির মাধ্যমেই হাদিসের অনুসরণ করেন। হাদিস-শরিয়াহ সম্পর্কে তাদের এত জ্ঞান ও ব্যুৎপত্তি নেই, যার দ্বারা হুকুম-আহকামের বিচার-বিশ্লেষণ করে সরাসরি তার ওপর আমল করতে পারে। মুক্তাদিদের সূরা ফাতিহা পড়া, রফউল ইয়াদাইন করা, উচ্চৈঃস্বরে আমিন বলা, ঈদের নামাজে ১২ তাকবির দেওয়া, একসঙ্গে তিন তালাক দিলে এক তালাক হওয়া ইত্যাদি যে কথাগুলো তারা বলে, সেগুলো মূলত অন্য কারও তাকলিদের ভিত্তিতেই বলে; গবেষণার ভিত্তিতে বলে না। 

আহলে হাদিসের কোনো আলিমের কাছে মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন এই মাসয়ালা সম্পর্কে শাইখ বিন বাজের মত এটি। শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল উসাইমিনের মত এটি। শাইখ আলবানির মত এটি। আর মাজহাবি কোনো আলিমকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনÑইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মত এটি। ইমাম শাফেয়ি (রহ.)-এর মত এটি। ইমাম মালেক (রহ.)-এর মত এটি। তাহলে উভয় দলের মধ্যে পার্থক্য থাকল কোথায়? পার্থক্য তো শুধুু এই, কেউ ইমামের অনুসরণ করছেন, আর কেউ করছেন শাইখের। সবাই যে কারও না কারও অনুসরণ করছেন, তা অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই।

আমরা যারা হানাফি মাজহাবের অনুসারী, তারাও কিন্তু ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর প্রকৃত অনুসরণ করি না। আমরা মূলত নিজ এলাকার ইমামের অনুসরণ করি। নিজ এলাকার আলিমের তাকলিদ করা দূষণীয় নয়। কেননা, আমরা সাধারণ মানুষরা বই-পুস্তক পড়ি না। আবার অনেকে পড়তে জানি না। তাই নিজ এলাকার আলিমদের ফতোয়ার ওপরই আমাদের জীবন নির্ভরশীল।

এ সম্পর্কে শাইখ উসাইমিন (রহ.) বলেন

فالعامي يجب عليه أن يقلد علماء بلده الذين يثق بهم-
‘নিজ এলাকার আলিমদের মধ্যে যিনি বিশ্বস্ত, সাধারণ মানুষের জন্য তার তাকলিদ বা অনুসরণ করা জরুরি।’ 
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এলাকার আলিম যা ফতোয়া দেন, আমরা যাচাই-বাছাই না করে সেটাই হানাফি মাজহাবের ফতোয়া হিসেবে গ্রহণ করি। মনে করি এটাই ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর কথা। বাস্তবে আমাদের সমাজে অনেক আমল প্রচলিত, যা হানাফি মাজহাবে স্বীকৃত নয়। যার ফলে দেখা যায়, বাংলাদেশের হানাফিদের সাথে মিশরের হানাফিদের মিল নেই। একই এলাকার দুজন হানাফি আলিম একই বিষয়ে বিপরীতমুখী ফতোয়া দিচ্ছেন। হয়তো তাদের একজন হানাফি মাজহাবের মাসয়ালা সঠিকভাবে উদ্ধার করতে পেরেছেন। আর অন্যজন পদস্খলনের শিকার হয়েছেন। নিম্নে অতি সংক্ষেপে হানাফি মাজহাববিরোধী কয়েকটা আমল ও আকিদা তুলে ধরছি।

লেখক: আসলাম হোসাইন
ক্যাটাগরি: ইসলামি আদর্শ ও মতবাদ
পৃষ্ঠা :১৭৬
মূল্য : ২০০ টাকা

ln.RelatedArticle